Bablu Malakar

पवित्र वेद धर्म मानव मात्र का एक है, मानवों के धर्म अलग अलग नहीं होते

নাগা সন্ন্যাসী আসলে কারা ও সাধুসন্ত ও সন্ন্যাসীদের অজানা জীবনযাত্রা অনবদ্য ইতিহাস

আমাদের সনাতন ধর্মের অনেকেই সংসার ধর্ম ত্যাগ করেন এবং সংসার জীবন থেকে অনেক দূরে চলে যায়, ঈশ্বর সাধনায় মগ্ন এবং শীত-গ্রীষ্ম সব ঋতুতেই শরীর থাকে উদোম এমন হুলিয়া বলে দেয় যে এরা নাগা সন্ন্যাসী বা নাগা সাধু। উপমহাদেশে সনাতন ধর্মীয় বিভিন্ন তীর্থকেন্দ্রের আশপাশে বিশেষ করে কুম্ভ মেলায় প্রায়ই তাদের দেখা মেলে। চুলে জটাধারী, গায়ে ছাইভষ্ম মাখা এই সন্ন্যাসীরা লোকালয়ে কমই আসে। কেউ কেউ এদের যোদ্ধা সন্ন্যাসী বলেন। অনেকেই মনে করেন, তাদের কামবাসনা চরিতার্থ করার মাধ্যম অর্থাৎ লিঙ্গ যেহেতু অকেজো করে দেওয়া হয় সেহেতু তাদের শারীরিক শক্তি প্রবল হয়। তাই নাগা সন্ন্যাসীরা বেশ শক্তসমর্থ হয়ে থাকে। প্রসঙ্গত, নাগা সন্ন্যাসীদের মাঝে নারীও (সন্ন্যাসিনী) আছে যা অনেকে হয়তো জানেন না। তবে তারা পুরো নগ্ন থাকে না।

একখণ্ড কাপড় দিয়ে শরীর ঢেকে রাখে এবং এমনকি গঙ্গাস্নানের সময়েও বস্ত্র ত্যাগ করে না। জীবন এবং মৃত্যুর বিদ্যা হচ্ছে পরাবিদ্যা, ব্রহ্মজ্ঞান। ব্রহ্মজ্ঞান বিনা (জগৎ বিষয়ে) প্রশ্নের সমাধান নেই। কোথা থেকে শুরু আর কোথায়ই বা গমন আর এ বিষয়ে সফলতার আনন্দটাই বা কী! ব্রহ্মজ্ঞান ছাড়া জীবনের আনন্দটাই বা কি যাকে খুঁজছেন আপনি সে-ই। হিন্দি মিডিয়া বলেছিলেন নভভারতটাইমস.কমকে এমন কথা বলছেন নাগা সাধু দিগম্বর অখিলেশপুরী। নাগা সাধুদের জীবনধারা সম্পর্কে তিনি আরো বলেন, আমাদের লিঙ্গ অকেজো করে দেওয়া হয়। আমাদের কোনো কামনা-বাসনা থাকে না। যারা যৌন কামনার প্রবল বেগকে সামলে নিতে পারে তারাই নাগা। কাম, ক্রোধ, লোভ সেই সিদ্ধি লাভ করে যে যৌনবাসনার বিরুদ্ধে জয়ী হয়।

নাগা অর্থ বিশ্বব্রহ্মাণ্ডের তারা প্রকৃত সত্যের সন্ধান করেন। এ ধরনের ব্যক্তিদের সাংসারিক জীবন থেকে দূরে থাকতে হয়। তাদেরকে ত্যাগের প্রতীক বলে মান্য করা হয়। ভক্তরা তারা সাধনা করে আর কঠিন ব্রত পাল করে। কুম্ভমেলার সময়ে নাগা সন্ন্যাসীদের ব্যাপক হারে দেখা যায়, নাগা সাধুরা বিভিন্ন দল-গোত্রে বিভক্ত। প্রায়ই তাদের মাঝে বিবাদ বিসম্বাদ লেগে যায়। প্রবল শারীরিক শক্তির প্রয়োগ দেখা যায় অনেক সময় একে অপরের ওপর। আবার সংসার ধর্মের বাইরে জীবন যাপন হলেও তাদের একেকটা আখড়ায় নিয়ম-কানুন রয়েছে, রয়েছে সাধারণ মানুষের মতো সামাজিক ব্যবস্থাপনা। প্রতি চার বছর অন্তর প্রধান বা শ্রীমোহন্ত নির্বাচন হয়, নির্বাচন হয় কোষাধ্যক্ষ (ট্রেজারার), কোতোয়াল, পূজারি প্রমুখ পদধারী। পূজারির কাজ নিয়মমতো পূজা করা, আখড়াগুলোর বিশাল সম্পদসূত্রে প্রাপ্ত অর্থভাণ্ডারের হিসাব রাখেন কোষাধ্যক্ষ, আর কোতোয়াল আশ্রমের শান্তিরক্ষা তথা সাধুদের মধ্যকার বিবাদ-বিসম্বাদ মেটানোর কাজ করে। সনাতনীদের পবিত্র তীর্থ হরিদ্বারের এক নাগা সাধু বলেন, নাগা সাধু হচ্ছে শুধু ধর্মের সৈনিক।

"ওহে সন্ন্যাসী তুমি তো সে বীর,
হে সন্ন্যাসী তুমি তো আমাদের ধর্মের ধ্বজাধারী;
অন্যায়ের বিরুদ্ধে তুমিই প্রলয়ঙ্কারী।"

আমাদের সনাতন ধর্মের সে সময়টা ১৬৬৪ সাল। কাশী বিশ্বনাথ মন্দির ভেঙে দেওয়ার অভিপ্রায়ে এগিয়ে আসছে আওরেঙ্গজেবে বর্বর সেনা। কিন্তু রুখে দাঁড়ায় অকুতোভয় দুঃসাহসী একদল বীর নাহ তারা কোনো পেশাদার সৈন্যবাহিনী ছিল না। কোনো রাজ্য কিংবা যোদ্ধা গোষ্ঠীর সদস্য ছিল না। তারা গৃহত্যাগী, স্বজন ত্যাগী, জাগতিক মোহ ত্যাগ করে সেই পরমাত্মার সান্নিধ্যে লাভে ধর্মের জন্য নিবেদিত এক সন্ন্যাসীর দল তারা আমাদের কাছে নাগা সন্ন্যাসী হিসেবে সমোধিক পরিচিত। তারাই গোকুলের ভূমিতে সংখ্যায় মাত্র ৪ হাজার হয়েও ৪০ হাজার আফগান সেনাদের আগ্রাসন রুখে দিয়েছিল। এবং তারাই ১৭৫৭ সালে মারাঠা ও শিখদের পরাজিত করা আবদালীকে রুখে দিয়ে মথুরারযোগেশ্বর ভগবান শ্রীকৃষ্ণের জন্মস্থান মন্দির রক্ষা করেছিল। সময় পেরিয়েছে, গঙ্গায় গড়িয়েছে বহু জল কিন্তু সে অদম্য তেজ হৃদয়ে ধারণ করে এখনো দাঁড়িয়ে থাকে অন্যায়ের বিরুদ্ধে যেকোনো অন্যায়ের বিরুদ্ধে আমার এ প্রাণ যে ধর্মের জন্য নিবেদিত, সে কি করে অধর্মের নিকট মাথা নত করতে পারে? সেজন্য তো এই জাতির ক্রান্তিলগ্নে কখনো স্বামী বিবেকানন্দ হয়ে কিংবা স্বামী শ্রদ্ধানন্দ হয়ে আলোক জৌতি হয়ে পথ দেখিয়ে চলছে। সেই ক্রমধারা এখনও বিদ্যমান এবং ভবিষ্যতেও বিদ্যমান থাকবে। ওহে বীর সন্ন্যাসী প্রণাম শতকোটি বার।

একজন নাগা সন্ন্যাসী হওয়া সহজ নয়, জীবিত অবস্থায় নিজের শ্রাদ্ধ নিজেকেই করতে হয়, নিজের পিন্ড নিজেকেই দান করতে হয়।"
অর্থাৎ মেনেই নেওয়া হয় তিনি অশরীরী বা দেহহীন। পার্থিব এই শরীরের মোহ তাঁকে ত্যাগ করতে হয়। শরীর নয়, শরীরের মধ্যে আত্মার অস্তিত্বে তাঁরা বিশ্বাসী।

আমাদের অনেকেরই মনে প্রশ্ন এই সভ্য সমাজে অঘোরী কিংবা নাগা সন্ন্যাসীরা উলঙ্গ থাকেন কেন? 
 অন্য ধর্মাবলম্বীদের  কথা ছাড়ুন, আমাদের সনাতন ধর্মের অনেকই এই নিয়ে দেখছি সোশ্যাল মিডিয়াতে নানান ব্যঙ্গ বিদ্রুপ ও করে চলেছেন। কিন্ত নাগা সন্ন্যাসী হওয়ার প্রক্রিয়া কি?
এবং কেন তারা প্রচন্ড শীতেও ভস্ম মেখে বিনাবস্ত্রে থাকেন, আসুন সংক্ষেপে জেনে নিই। 

নাগা সন্ন্যাসী হওয়ার প্রক্রিয়া খুব কঠিন এবং দীর্ঘ একজন সাধারণ মানুষের নাগা সন্ন্যাসীর হয়ে উঠতে কমপক্ষে প্রায় ছয় বছর সময় লাগে। নিয়ম মতে একজন উলঙ্গ নাগা সাধু শুধুমাত্র কোটি ছাড়া আর কিছুই পরতে পারেন না। কুম্ভমেলাতেই সন্ন্যাসী হওয়ার জন্য চূড়ান্ত শপথ নেন তাঁরা। এই সময় অনেকেই জীবন থেকে শেষ বস্ত্রটুকু ত্যাগ করেন। এর পর সারা জীবন ওই ভাবেই জীবন অতিবাহিত করেন নাগা সন্ন্যাসীরা। এই কারণেই বহু নাগা সন্ন্যাসী কেবল কোটি পরেই ঘুরে বেড়ান। সন্ন্যাসী হওয়ার আগে প্রথমে কোনও ব্যাক্তিকে দীর্ঘকাল ব্রহ্মচারী থাকতে হয়, তারপর তাকে মহাপুরুষ ও অবধূত করা হয়। নাগা সন্ন্যাসী হওয়ার চূড়ান্ত প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয় এই কুম্ভের সময়েই। পুণ্য লগ্নে স্নান করে নিজের পিন্ড নিজেকে দান করতে হয়। সারতে হয় ডান্ডি সংস্করণ প্রথা সহ আরও অনেক নিয়ম কানুন। নাগা সন্ন্যাসীরা নিজেদের শরীরে যে ছাই মাখেন তাও কোনও সাধারণ ছাই নয়। বিশেষ নিয়ম মেনে যজ্ঞকুন্ডে পিপল, রসালা, বেলপাতা, কলা এবং গরুর গোবর পুড়িয়ে তারপরে প্রস্তুত করা হয় যজ্ঞের বিশেষ ছাই অর্থাৎ ভস্ম। বিশেষজ্ঞদের মতে নাগা শব্দের অর্থ ধর্মের রক্ষক। সনাতন ধর্মকে রক্ষা করাই তাঁদের একমাত্র কাজ।

আগোরি সাধু কে—
আগোরি সাধুরা মূলত শ্মশানভূমিতে বাস করেন এবং ভৌতিক শক্তি নিয়ে সাধনা করেন। এরা মাটি বা ছাই মেখে থাকেন এবং মানব কঙ্কাল ব্যবহার করেন সাধনার অংশ হিসেবে। তাদের সাধনা ভয়ঙ্কর ও রহস্যময় বলে পরিচিত।

নাগা সাধু কে—
নাগা সাধুরা সম্পূর্ণ নগ্ন থাকেন এবং কেবলমাত্র ছাই দিয়ে তাদের শরীর ঢাকেন। তারা যুদ্ধজ্ঞানেও দক্ষ এবং ঐতিহ্যগতভাবে কুম্ভ মেলায় এদের প্রভাবশালী উপস্থিতি লক্ষ্য করা যায়।

জলচারী সাধু কে—
এই সাধুরা মূলত গঙ্গা নদীতে থাকেন এবং নদীর মধ্যেই তাদের সাধনা করেন। তাদের বিশ্বাস, গঙ্গার পবিত্র জলে সাধনার মাধ্যমে তারা মোক্ষ লাভ করবেন।

অষ্টাঙ্গ সাধু কে—
এরা যোগ এবং ধ্যানের মাধ্যমে অষ্টাঙ্গ যোগের পথ অনুসরণ করেন। এই সাধুরা শারীরিক, মানসিক, এবং আধ্যাত্মিক উন্নতির জন্য নিরলসভাবে কাজ করেন।

উর্ধ্ববাহু সাধু কে—
এই সাধুরা নিজেদের এক হাত বা উভয় হাত দীর্ঘ সময় ধরে ওপরে তুলে রাখেন, কখনো কখনো সারাজীবনের জন্য। এটি তাদের ভক্তির প্রকাশ এবং শারীরিক কষ্টের মাধ্যমে ঈশ্বরপ্রাপ্তির এক অদ্ভুত উপায়।

গুরুভক্ত সাধু কে—
এরা কোনো নির্দিষ্ট গুরুর প্রতি অগাধ বিশ্বাস রাখেন এবং তাদের সাধনা শুধুমাত্র গুরুর নির্দেশ অনুযায়ী হয়। এদের মধ্যে গুরুসেবা এবং তার প্রশংসা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।

পরিভ্রাজক সাধু কে—
এরা কোনো নির্দিষ্ট স্থানে বসবাস করেন না। জীবনের বেশিরভাগ সময় তাঁরা তীর্থস্থান বা জঙ্গলে ভ্রমণ করে কাটান। এরা সংসারধর্ম ত্যাগ করে কেবল ঈশ্বরের সন্ধানে থাকেন।

ধুনি সাধু কে—
এরা ধুনির (পবিত্র আগুন) পাশে ধ্যান করেন এবং সারা জীবন সেই আগুন রক্ষা করেন। এই আগুন তাঁদের সাধনার কেন্দ্রবিন্দু। ধুনির চারপাশে বসে ধ্যান করার মাধ্যমে তাঁরা আত্মশুদ্ধি লাভ করেন।

অঘোরপন্থী সাধু কে—
অঘোরপন্থী সাধুরা জীবন-মৃত্যুর ভেদ ভুলে সমস্ত কিছুতে ঈশ্বরের উপস্থিতি অনুভব করেন। তাঁরা সমাজের অবহেলিত অংশের সঙ্গে মিশে তাঁদের সেবা করেন এবং জীবন সম্পর্কে ভিন্নধর্মী দৃষ্টিভঙ্গি তুলে ধরেন।

করপথী সাধু কে—
এই সাধুরা ভিক্ষার মাধ্যমে জীবনধারণ করেন এবং একেবারেই সাধারণ জীবনযাপন করেন। তাঁরা শুধুমাত্র এক হাত ব্যবহার করে ভিক্ষা করেন এবং আত্মত্যাগের প্রতীক হিসেবে পরিচিত।

কপালিক সাধু কে—
এরা শিবের উপাসক এবং শ্মশান ঘিরে সাধনা করেন। কপালিকরা তাঁদের কপালের ছাই ও ভৌতিক আচার-অনুষ্ঠানের জন্য পরিচিত।

বৈষ্ণব সাধু কে—
এরা ভগবান বিষ্ণুর উপাসক। তাঁরা সাধারণত শান্ত, সাদা পোশাক পরেন এবং রাধা-কৃষ্ণ বা বিষ্ণুর ভক্তিমূলক গানে ও ধ্যানে মগ্ন থাকেন।

আমাদের সনাতন ধর্মের সাধু (সংস্কৃত: साधु) হলেন ধর্মীয় তপস্বী, ভিক্ষাজীবী (ভিক্ষু সন্ন্যাসী) অথবা হিন্দুধর্ম বৌদ্ধধর্ম ও জৈনধর্মের সাংসারিক জীবন পরিত্যাগ করা পবিত্র ব্যক্তি।কখনও কখনও তাঁদেরকে যোগী, সন্ন্যাসী বা বৈরাগীও বলা হয়ে থাকে। এটি আক্ষরিক অর্থে "সাধনা অনুশীলনকারী" বা "আধ্যাত্মিক শৃঙ্খলার পথ অনুসরণকারী"। যদিও সাধুদের অধিকাংশই যোগী, তবুও সকল যোগী সাধু নয়। ধ্যান ও ব্রহ্মের চিন্তণের মাধ্যমে, সাধু মোক্ষ অর্জনের জন্য নিবেদিত হয়। সাধুরা প্রায়ই সাধারণ পোশাক পরিধান করেন, যেমন হিন্দুধর্মে গেরুয়া রঙের কাপড়, জৈনধর্মে কোনও সাদা কিংবা কিছুই না, তাঁদের সন্ন্যাসকে প্রকাশ করতে। হিন্দুধর্ম ও জৈনধর্মে মহিলা ভিক্ষুকে প্রায়শই সাধ্বী বলা হয়, অথবা কিছু গ্রন্থে আর্যিকা হিসাবে বলা হয়। 
সাধু শব্দটি ঋগ্বেদ ও অথর্ববেদে আবির্ভূত এবং বৈদিক সাহিত্যের ব্রাহ্মণ স্তরে, এই শব্দটি এমন একজনকে বোঝায় যিনি প্রেক্ষাপটের উপর নির্ভর করে "সুস্থ, সদয়, ইচ্ছুক, কার্যকর বা দক্ষ, শান্তিপূর্ণ, নিরাপদ, ভাল, গুণী, সম্মানিত, ধার্মিক, মহৎ"। হিন্দু মহাকাব্যে, শব্দটি এমন একজনকে বোঝায় যিনি "সন্ত, ঋষি, দ্রষ্টা, পবিত্র মানুষ, গুণী, পবিত্র, সৎ বা সঠিক"। সংস্কৃত পরিভাষা সাধু ও সাধ্বী ত্যাগীদেরকে বোঝায় যারা তাদের নিজস্ব আধ্যাত্মিক অনুশীলনের দিকে মনোনিবেশ করার জন্য সমাজের বাইরে বা প্রান্তে জীবনযাপন করতে বেছে নিয়েছে। শব্দগুলি মূল সাধ থেকে এসেছে, যার অর্থ "নিজের লক্ষ্যে পৌঁছানো", "সোজা করা" বা "ক্ষমতা অর্জন করা"। একই মূল সাধন শব্দে ব্যবহৃত হয়, যার অর্থ আধ্যাত্মিক অনুশীলন। এর আক্ষরিক অর্থ হল যিনি সাধনা বা আধ্যাত্মিক অনুশাসনের পথ অনুশীলন করেন।

সাধুরা তাদের পবিত্রতার জন্য ব্যাপকভাবে সম্মানিত। এটাও মনে করা হয় যে সাধুদের কঠোর অনুশীলন তাদের কর্ম এবং বৃহত্তর সম্প্রদায়কে পুড়িয়ে ফেলতে সাহায্য করে। এইভাবে সমাজের উপকারী হিসাবে দেখা হয়, সাধুরা অনেক লোকের দান দ্বারা সমর্থিত হয়। যাইহোক, সাধুদের শ্রদ্ধা ভারতে সর্বজনীন নয়। উদাহরণস্বরূপ, নাথ যোগী সাধুকে বিশেষ করে ভারতের শহুরে জনগোষ্ঠীর মধ্যে সন্দেহের দৃষ্টিতে দেখা হয়, কিন্তু তারা শ্রদ্ধেয় এবং গ্রামীণ ভারতে জনপ্রিয়। নগ্ন (দিগম্বর, বা "আকাশ-পরিহিত") সাধু আছে যারা তাদের চুল পুরু ড্রেডলকের মধ্যে পরিধান করে যাকে বলা হয় জাটা। সাধুরা বিভিন্ন ধরনের ধর্মীয় অনুশীলনে জড়িত। কেউ কেউ তপস্যা এবং একাকী ধ্যান অনুশীলন করেন, অন্যরা দলগত প্রার্থনা, জপ বা ধ্যান করতে পছন্দ করেন। তারা সাধারণত সাধারণ জীবনযাপন করে, তাদের কাছে খুব কম বা কোন সম্পদ নেই, তারা ভিক্ষা করে বা অন্যদের দ্বারা দান করা অবশিষ্টাংশ থেকে খাবার এবং পানীয় দ্বারা বেঁচে থাকে। অনেক সাধুর ভিক্ষা সংগ্রহের নিয়ম রয়েছে এবং বাসিন্দাদের বিরক্ত না করার জন্য বিভিন্ন দিনে দুবার একই জায়গায় যান না। তারা সাধারণত তাদের আধ্যাত্মিক অনুশীলনের অংশ হিসাবে দূরবর্তী স্থান, গৃহহীন, মন্দির এবং তীর্থস্থান পরিদর্শন করে বা ভ্রমণ করে। ব্রহ্মচর্য সাধারণ, কিন্তু কিছু সম্প্রদায় তাদের অনুশীলনের অংশ হিসেবে সম্মতিমূলক তান্ত্রিক যৌনতা নিয়ে পরীক্ষা করে। যৌনতা তাদের দ্বারা দেখা হয় ব্যক্তিগত, অন্তরঙ্গ কাজ থেকে নৈর্ব্যক্তিক এবং তপস্বী কিছুর সীমা অতিক্রম করে।

সাধু হওয়ার প্রক্রিয়া এবং আচার-অনুষ্ঠান বিভিন্ন সম্প্রদায়ের সাথে পরিবর্তিত হয়; প্রায় সব সম্প্রদায়ের মধ্যে, সাধু গুরুর দ্বারা দীক্ষিত হন, যিনি দীক্ষা দেওয়ার জন্য নতুন নাম প্রদান করেন, সেইসাথে মন্ত্র, (বা পবিত্র শব্দ বা বাক্যাংশ), যা সাধারণত শুধুমাত্র সাধু এবং গুরুর কাছে পরিচিত এবং হতে পারে সূচনা দ্বারা পুনরাবৃত্তিধ্যান অনুশীলনের অংশ হিসাবে। সাধু হওয়া একটি পথ যা লক্ষ লক্ষ লোক অনুসরণ করে। এটা একজন হিন্দুর জীবনের চতুর্থ পর্যায় হওয়ার কথা, পড়াশুনার পর, একজন বাবা এবং একজন তীর্থযাত্রী হওয়া, কিন্তু বেশিরভাগের জন্য এটি বাস্তব বিকল্প নয়। একজন ব্যক্তির সাধু হওয়ার জন্য বৈরাগ্য প্রয়োজন। বৈরাগ্য মানে পৃথিবী ত্যাগ করে কিছু অর্জনের আকাঙ্ক্ষা (পারিবারিক, সামাজিক ও পার্থিব সংযুক্তি কাটা)। যে ব্যক্তি সাধু হতে চায় তাকে প্রথমে একজন গুরুর সন্ধান করতে হবে। সেখানে তাকে অবশ্যই গুরুসেবা করতে হবে যার অর্থ সেবা। গুরু সিদ্ধান্ত নেন যে ব্যক্তিটি শিষ্য (যে ব্যক্তি সাধু বা সন্ন্যাসী হতে চায়) পালন করে সন্ন্যাস গ্রহণের যোগ্য কিনা। যদি ব্যক্তি যোগ্য হয়, গুরু উপদেশ (যার অর্থ শিক্ষা) সম্পন্ন হয়। তবেই, ব্যক্তিটি সন্ন্যাসী বা সাধুতে রূপান্তরিত হয়। ভারতে বিভিন্ন ধরনের সন্ন্যাসী রয়েছে যারা বিভিন্ন সম্প্রদায় অনুসরণ করে। কিন্তু, সকল সাধুর সাধারণ লক্ষ্য থাকে: মোক্ষ (মুক্তি) অর্জন করা।

অতএব আপনি যদি প্রকৃত সনাতনী হয়ে থাকেন তবে সাধুসন্ত ও নাগা সন্ন্যাসীদের উপহাস নয়, শ্রদ্ধা করুন।

শ্রী বাবলু মালাকার
সনাতন সংস্কৃতি ও বেদ বেদান্তদর্শন প্রচারক,
সনাতন বিদ্যার্থী সংসদ, বাংলাদেশ।

জয় শ্রীকৃষ্ণ, জয় শ্রীরাম,
হর হর মহাদেব।







Post a Comment

0 Comments