Bablu Malakar

पवित्र वेद धर्म मानव मात्र का एक है, मानवों के धर्म अलग अलग नहीं होते

বর্ণবাদ অনুসারে সনাতন ধর্ম শাস্ত্রে ব্রাহ্মণ কে?


ব্রাহ্মণ বর্ণ জাত নয়, বর্ণের অর্থ চয়ন বা নির্ধারন এবং সামান্যতঃ শব্দ বরণেও এই অর্থ ব্যবহৃত হয়। ব্যক্তি নিজ রূচি, যোগ্যতা এবং কর্মরন অনুসারে ইহাকে স্বয়ং বরণ করে, এই জন্য ইহার নাম বর্ণ। বৈদিক বর্ণ ব্যবস্থা মধ্যে ব্রাহ্মণ একটি বর্ণ।

             পবিত্র বেদ অনুসারে ব্রাহ্মণ কে?

সেই ব্রাহ্মণ সৃষ্টিকর্তা ব্রহ্মার মুখ হইতে সৃষ্টি।
              ব্রাহ্মণো অস্য মুখমাসীদ্
(যজুর্বেদ, ৩১/১১), (ঋগ্বেদ, ১০/৯০/১২), (মনুসংহিতা, ১/৩১)।

অনুবাদঃ— সেই পরমাত্মার সৃষ্টিতে বেদের জ্ঞাতা ও ঈশ্বরের উপাসক ব্রাহ্মণ মুখের তুল্য। 

পদার্থঃ (অস্য) সেই পরমাত্মার দৃষ্টিতে (ব্রাহ্মণঃ) বেদের জ্ঞাতা  ঈশ্বরের উপাসক ব্রাহ্মন (মুখম) মুখের তুল্য (আসীম) হয়।

যে মানুষ বেদ বিদ্যা শম-দমাদি উত্তম গুনে মুখ্য, ব্রহ্মের জ্ঞাতা এবং মুখের মাধ্যমে জগৎকে জ্ঞানদান করেন তিনি ব্রাহ্মণ।

যে ঈশ্বরের প্রতি গভীরভাবে অনুরক্ত, অহিংস, সৎ  নিষ্ঠাবান, সুশৃঙ্খল, বেদ প্রচারকারী, বেদ জ্ঞানী সে ব্রাহ্মণ।
                   (ঋগ্বেদ, ৭/১০৩/৮)

               গীতা অনুসারে ব্রাহ্মণ কে?

১) মন নিগ্রহ করা, ২) ইন্দ্রিয়কে বশে রাখা, ৩) ধর্মপালনের জন্য কষ্ট স্বীকার করা, ৪) বাহ্যান্তর শুচি রাখা, ৫) অপরের অপরাধ ক্ষমা করা, ৬) কায়-মনো-বাক্যে সরল থাকা, ৭) বেদ-শাস্ত্রাদিতে জ্ঞান সম্পাদন করা, ৮) যজ্ঞবিধি অনুভব করা, ৯) পরমাত্মা, বেদ ইত্যাদিতে বিশ্বাস রাখা— এই সবই হর ব্রাহ্মণের স্বভাবজাত কর্ম বা লক্ষণ। 
                         (গীতা, ১৮/৪২)

জন্মসূত্রে কেউ ব্রাহ্মণ নয়, কর্মগুণ অনুসারে চতুবর্ণের পেশাগত জীবন তৈরি করেছেন।

বেদ, গীতা, উপনিষদ এবং মনুসংহিতা ও বলছে,       

"একজন জ্ঞানের উচ্চ পথে (ব্রাহ্মন) অপরজন বীরত্বের গৌরবে (ক্ষত্রিয়), একজন তার নির্দিষ্ট লক্ষ্যে (পেশাভিত্তিক), আরেকজন সেবার পরিশ্রমে (শূদ্র)। সকলেই তার ইচ্ছা মাফিক পেশায়, সকলের জন্যই ঈশ্বর জাগ্রত।
                     (ঋগ্বেদ, ১/১১৩/৬)

একেক জনের কর্মক্ষমতা ও আধ্যাত্মিকতা একেক রকম আর সে অনুসারে কেউ ব্রাহ্মণ, কেউ ক্ষত্রিয়, কেউ বেশ্য, কেউ শূদ্র।
                     (ঋগ্বেদ, ৯/১১২/১)

মানুষের সমৃদ্ধি কামনায় পরমেশ্বর নিজের মুখ থেকে ব্রাহ্মণ, বাহু খেকে ক্ষত্রিয়, উরু থেকে বৈশ্য, আর পা থেকে শুদ্র সৃষ্টি করেছিলেন।
                      (মনুসংহিতা, ১/৩১)

শ্রীমদ্ভগবতগীতার ৪র্থ অধ্যায়ের ১৩তম শ্লোকে শ্রীকৃষ্ণ বাণীতে বলেছেন,

चातुर्वर्ण्यं मया सृष्टं गुणकर्मविभागशः ।
तस्य कर्तारमपि मां विद्ध्यकर्तारमव्ययम् ॥

চাতুর্ব্বর্ণ্যন ময়া সৃষ্টং গুণকর্ম্মবিভাগশঃ।
তস্য কর্তারমপি মাং বিদ্ধকর্তারমব্যয়ম্।।
           (শ্রীমদ্ভগবতগীতা, ৪/১৩)

অনুবাদঃ— প্রকৃতির তিনটি গুণ ও কর্ম অনুসারে আমি মানব-সমাজে ব্রাহ্মণ, ক্ষত্রিয়, বৈশ্য এবং শূদ্র চারটি বর্ণবিভাগ সৃষ্টি করেছি। আমি এই প্রথার স্রষ্টা হলেও আমাকে অকর্তা এবং অব্যয় বলে জানবে।

(শ্রীমদ্ভগবতগীতা, ৪/১৩) বিশ্লেষণঃ—
ব্রাহ্মণ, ক্ষত্রিয়, বৈশ্য এবং শূদ্র—এই বর্ণচতুষ্টয় গুণ এবং কর্মের বিভাগ অনুসারে আমি সৃষ্টি করেছি। জীবের গুণ এবং কর্ম অনুসারে আমি তাদের চার বর্ণের সৃষ্টি (ব্রাহ্মণ, ক্ষত্রিয়, বৈশ্য ও শূদ্র) ভাগ করি। কিন্তু এই সৃষ্টি-রচনা প্রভৃতির কর্মগুলি কর্তৃত্ব ও ফলেচ্ছা পরিত্যাগ করেই করি।

শ্রীমদ্ভগবতগীতার, ১৮ অধ্যায়ের, ৪১তম শ্লোকে শ্রীকৃষ্ণ বাণীতে বলেছেন,

ब्राह्मणक्षत्रियविशां शूद्राणां च परन्तप ।
कर्माणि प्रविभक्तानि स्वभावप्रभवैर्गुणैः ॥

ব্রাহ্মণক্ষত্রিয়বিশং শূদ্রাণাঞ্চ পরন্তপ।
কর্মাণি প্রবিভক্তানি স্বভাবপ্রভবৈর্গুণেঃ।।
(শ্রীমদ্ভগবতগীতা, ১৮/৪১)

অনুবাদঃ— হে পরন্তপ! ব্রাহ্মণ, ক্ষত্রিয়, বৈশ্য তথা শূদ্রদের কর্ম স্বভাবজাত গুণ–অনুযায়ী ভাগ করা হয়েছে।

(শ্রীমদ্ভগবতগীতা, ১৮/৪১) বিশ্লেষণঃ—
হে পরন্তপ! এই জগতে ব্রাহ্মণ, ক্ষত্রিয়, বৈশ্য ও শূদ্র—এই চারটি বর্ণের বিভাগ মানুষের স্বভাবজাত গুণাদি অনুসারে কথা হয়েছে। সুতরাং নিজ নিজ বর্ণনুসারে নিয়ত কর্ম (স্বধর্ম) অনুষ্ঠিত করাই হল এই গুণাদি থেকে মুক্ত হবার উপায়।।

প্রশ্ন আসতে পারে সবার, ব্রাহ্মণ হতে হলে কি করতে হবে?

যে ব্রাহ্মণ প্রণব (ওঁ) ও গায়ত্রী যিনি জপ করেন, তিনিই বেদত্রয় পূণ্যে যুক্ত হন।
                       (মনুসংহিতা, ২/৭৮)

বেদে পারদর্শী আচার্য দ্বারা শিষ্যকে গায়ত্রী মন্ত্রের দীক্ষা দেওয়ার উপরান্ত তাহার বাস্তবিক মনুষ্য জন্ম হয়ে থাকে।
                          (মনু, ২/১৪৮)

হিংসাশূন্য হয়ে জপ পরায়ণ হলেই তাঁকে ব্রাহ্মণ বলা যায়, তিনিই ব্রহ্মে লীন হন।
                     (মনুসংহিতা, ২/৮৭)

মাতা-পিতা দ্বারা উৎপন্ন সন্তান মাতার গর্ভ দ্বারা প্রাপ্ত সাধারন জন্ম। বাস্তবিক জন্ম তো শিক্ষা পূর্ণ করার পরই হয়ে থাকে।
                         (মনু, ২/১৪৭)

একমাত্র চরিত্রই ব্রাহ্মণত্বের নিয়ামক শাস্ত্রে আছে,
                   "ব্রহ্ম জানাতি ব্রাহ্মণঃ"
এ কথাও স্পষ্টভাবে উল্লেখ আছে, সুতরাং যোগ্যতা অর্জন করে গুরু, ব্রাহ্মণ ও পুরোহিত হতে পারেন।

  শ্রীশ্রী স্বামী স্বরূপানন্দ পরমহংসদেব বলেছেন,

যিনি ব্রহ্মকে জানেন তিনিই ব্রাহ্মণ; যিনি জানতে চান তিনিও ব্রাহ্মণ পদবাচ্য।

আবার শ্রীশ্রী স্বামী স্বরূপানন্দ পরমহংসদেব বলেছেন,

যে ওঁকার স্বরূপ এই ব্রহ্মকে জানলেই বা জানার চেষ্টা করলেই ব্রাহ্মণ হওয়া যায় বা তিনি ব্রাহ্মণ।

এখন এই মহাপুরুষের কথা আমরা মিলিয়ে নেওয়া যাক,

বৃহদারণ্যক উপনিষদের (৩/৮/১১) তে বলেছেন,
যিনি অক্ষরকে জানিয়া ইহলোক ত্যাগ করে তিনিই ব্রাহ্মণ।

আবার আপনার মনে প্রশ্ন আসতে পারে, এক অক্ষর কি?

শ্রীমদ্ভগবত গীতা তো সকলের কাছেই আছে, তাহলে সেই গ্রন্থ ভাল করে দেখুন—

                শ্রীভগবান শ্রীকৃষ্ণ বলেছেন,

                     অক্ষরং ব্রহ্ম পরমং
                          (গীতা, ৮/৩) 
অর্থাৎ পরম অক্ষর যে বস্তু তাহাই ব্রহ্ম; ওঁ এই অক্ষরই ব্রহ্ম৷

এবার এই অক্ষর এর স্বরূপ গীতার (৮/১৩) তে বলেছেন,
                    ওমিত্যেকাক্ষরং ব্রহ্ম 
                        (গীতা, ৮/১৩)
অর্থাৎ 'ওঁ' এই এক অক্ষররূপেই বহ্ম।

পড়া-পড়ানোর দ্বারা, চিন্তন মনন করার দ্বারা, ব্রহ্মচর্য, অনুশাসন, সত্যভাষন আদি ব্রত পালন করার দ্বারা , পরোপকার আদি সৎকর্ম করার দ্বারা, বেদ, বিজ্ঞান আদি পড়ার দ্বারা, কর্ত্যবের পালন দ্বারা, দান করার দ্বারা এবং আদর্শের প্রতি সমর্পিত থাকার দ্বারা মানুষের এই শরীর ব্রাহ্মণের শরীরের পরিণত হয়।
                            (মনু ২/২৮)

                   মনুস্মৃতি নিয়ম অনুসারে  

ব্রাহ্মণ ও শুদ্র হতে পারে এবং শুদ্রও ব্রাহ্মণ হতে পারে। এই প্রকার ক্ষত্রিয় ও বৈশ্যও নিজ নিজ বর্ণ পরিবর্তন করতে পারে।
                     (মনুস্মৃতি, ১০/৬৫)

শরীর এবং মন দ্বারা শুদ্ধ-পবিত্র এবং উৎকৃষ্ট লোকের সান্নিধ্যে স্থিত। মিষ্টিভাষী, অহংকার রহিত, নিজ থেকে উৎকৃষ্ট বর্ণের সেবাকারী শুদ্রও উত্তম ব্রহ্ম জন্ম বা দ্বিজ বর্ণকে প্রাপ্ত করতে পারে।
                    (মনুস্মৃতি, ৯/৩৩৫)

যে মনুষ্য নিত্য প্রাত এবং সন্ধ্যায় ঈশ্বরের আরাধনা করে না তাহাকে শুদ্র বলে জানবে।
                     (মনুস্মৃতি, ২/১০৩)

যে ব্যক্তি বেদের শিক্ষাই দীক্ষিত হয় নি সে শুদ্র তুল্য।
                    (মনুস্মৃতি, ২/১৭২)

যে ব্রাহ্মণ বেদের অধ্যয়ন বা পালন ছেড়ে অন্য বিষয়ে প্রযত্ন করেন সে শুদ্রত্ব প্রাপ্ত হয়।
                    (মনুস্মৃতি, ২/১৬৮)

ব্রাহ্মণ বর্নস্থ ব্যক্তি শ্রেষ্ঠ অতিশ্রেষ্ঠ ব্যক্তি সঙ্গ করে এবং নিচ থেকে নিচতর ব্যক্তির সঙ্গ ছেড়ে অধিক শ্রেষ্ঠ হয়। ইহার বিপরীত আচরনে পতিত হয়ে সে শুদ্রত্ব প্রাপ্ত হয়।
                    (মনুস্মৃতি, ৪/২৪৫)

এমনকি কেন ব্রাহ্মণ হোক, কিন্তু যদি সে অভিবাদনের উত্তর শিষ্টতার সহিত দিতে না জানে, তবে সে শুদ্র।
                    (মনুস্মৃতি, ২/১২৬)

অতঃএব ইহা স্পষ্ট যে, ব্রাহ্মণ উত্তম কর্মকারী বিদ্বানকে বলে, এবং শুদ্রের অর্থ অশিক্ষিত ব্যক্তি ইহা কোন জন্মগত সমন্ধ্য নয়।

“জন্মনা জায়তে শূদ্রঃ সংস্কারাৎ দ্বিজ উচ্যতে।
বেদ পাঠে ভবেৎ বিপ্রঃব্রহ্ম জানাতি ব্রাহ্মণঃ”।।

জন্ম মাত্রে সবাই শূদ্র, কেননা তখন তার মধ্যে জ্ঞানের উন্মেষ ঘটেনি। এর পরে যখন সে গুরুর নিকট থেকে সংস্কার সাধনা বিজ্ঞান শিখল, সাধনা করতে শুরু করলো, তখন সে দ্বিজ অর্থাৎ তার দ্বিতীয় বার জন্ম হয়েছে, অধ্যাত্ম জগতে সে প্রবেশ করেছে। বিদ্ ধাতু থেকে উৎপন্ন বেদ শব্দের প্রকৃত অর্থ হ’ল জ্ঞান। তাই যখন সে লেখা পড়া করে, শাস্ত্রাদি চর্চা করে জ্ঞান লাভ করলো তখন সে বিপ্র বা বুদ্ধিজীবি। আর যখন অন্তর্মুখী মানস আধ্যাত্মিক সাধনার দ্বারা ব্রহ্মজ্ঞান লাভ করলো, ব্রহ্ম উপলব্ধি করতে পারলো তখন সে ব্রাহ্মণ। তাই ব্রাহ্মণত্ব জন্মগত নয়, সাধনার দ্বারা ব্রাহ্মণত্ব অর্জন করতে হয়। কিন্তু বর্তমান পৌরাণিক হিন্দু সমাজে যারা নিজেদের ব্রাহ্মণ বলে পরিচয় দেয়, তারা জন্মসূত্রে,বংশ ধারায় জাতিগত ভাবে ব্রাহ্মণ উপাধির দাবী করে, তাদের না আছে সাধন-ভজন, না আছে ব্রহ্ম উপলব্ধি।

পরমেশ্বর রূপের প্রকাশ ভগবান শ্রীকৃষ্ণ কহিলেন,
চারি বেদজ্ঞ ব্রাহ্মণ ও যদি আমার ভক্ত না হয়, তবে সে আমার প্রিয় নহে; কিন্তু চন্ডাল ও যদি আমার ভক্ত হয়, তবে সে আমার প্রিয়; তাহাকেই দান করিবে ও তাহার নিকট হইতেই গ্রহণ করিবে-সে ব্যাক্তি আমারই মত পূজনীয়।।
        (চৈঃ চঃ মধ্যলীলা শ্লোক, ৫০ ১৯ পরিচ্ছেদ)

                   ব্রাহ্মণের পূর্ণরূপ কি?
যেমন কাষ্ঠন নির্মিত হস্তি এবং চর্ম নির্মিত হরিণ কেবল নাম মাত্র হস্তি এবং হরিণ বলা হয় তেমনি বিদ্যাহীন ব্রাহ্মণ কেবল নাম মাত্র ব্রাহ্মণের নাম ধারণ করেন।
                         (মনু, ২/১৫৭)

ব্রাহ্মণ হল একটি গুণবাচক বর্ণ; যে ব্যক্তির যোগ্যতার নির্ধারণ শিক্ষা প্রাপ্তির পশ্চাতেই হয়। জন্মের আধারের উপর হয় না। কোন ব্যক্তির গুণ, কর্ম এবং স্বভাবের আধারের উপরই তার বর্ণের নির্ধারণ হয়। কোন ব্যক্তি যদি অশিক্ষিত হন এবং নিজেকে ব্রাহ্মণ বলে তো তাহা ভূল। সমাজের সবচেয়ে জ্ঞানী, বুদ্ধিমান, শিক্ষিত,  সমাজের মার্গদর্শন কারী, ত্যাগী, তপস্বী ব্যক্তিই ব্রাহ্মণ বলার অধিকারী হয়ে থাকে। ব্রাহ্মণ পবিত্র বেদ ও অন্যান্য শাস্ত্র অনুযায়ী ব্যক্তির গুণ এবং কর্ম অনুযায়ী ব্রাহ্মণ পরিচিতি লাভ করে, ব্রাহ্মণ হলো সেই সকল ব্যক্তি যে যারা মধ্যে জ্ঞানী পন্ডিত। যে সকলকে বেদ, গীতা, উপনিষদ অনুযায়ী জ্ঞান দান করেন। ব্রহ্মাণ ব্রহ্মজ্ঞান প্রাপ্ত হয়েছেন যিনি ব্রহ্মচর্য পালন করেন। আসনে আত্মকল্যাণ (মুক্তির) পথ মানেন যে বেদশাস্ত্র মতে ব্রাহ্মণ হয়েছেন যিনি কাম, ক্রোধ, লোভ, লালসা দমনে স্বাধীন করেন। যার মনে পরমব্রহ্ম পরমাত্মা জ্ঞান লাভের প্রাপ্তি হয়েছে। তাই প্রাণ দিতেও ভয় নেই যার সনাতন সত্যের প্রতিষ্ঠা করিবা জন্য সুতরাং, উপরোক্ত গুন গুলি যাঁহার মাঝে বিদ্যমান তিনিই হলেন ব্রাহ্মণ। এইজন্য ব্রাহ্মণ বর্ণকে অধিক সম্মান দেওয়া হয়। বৈদিক বিচারধায় ব্রাহ্মণকে যেমন অধিক সম্মান দেওয়া হয়েছে ঠিক তেমনি ব্রাহ্মণের খারাপ কার্য করার জন্য পরে তাকে অধিক দন্ডও দেওয়া হয়েছে।

একই অপরাধ করার জন্য শুদ্রের সবচেয়ে কম দন্ড, বৈশের দ্বিগুন, ক্ষত্রিয়ের তিন গুন এবং ব্রাহ্মণের ষোল বা ১২৮ দন্ডের বিধান।
                        (মনু, ৩৩৭-৩৩৮)

           তাহলে বর্তমান সমাজে ব্রাহ্মণ কে?
     সনাতন ধর্মের বর্তমান সমাজে কে ঈশ্বরের প্রতি,

১) গভীরভাবে অনুরক্ত?
২) অহিংস কে?
৩) সৎ নিষ্ঠাবান কে?
৪) সুশৃঙ্খল কে?
৫) বেদ প্রচারকারী কে?
৬) বেদ জ্ঞানী কে?

এই ছয়টি বোধ যার মধ্যে থাকবে সেই ব্রাহ্মণ, এবং যার মধ্যে এ বোধ গুলো আসবে না সেই উপনয়ন ধারণকারী ব্যক্তি কখনোই ব্রাহ্মণ নয়। পরিশেষে সকল দার্শনিক, জ্ঞানী, বিজ্ঞানীকে ব্রাহ্মণ বলা যায় ব্যাখ্যা অনুসারে কিন্তু কোনো পৈতাধারীকে নয়।

অতএব, ব্যাখ্যা অনুসারে যে সত্য, সুন্দর, চিরন্তনের প্রতি গভীর অনুরক্ত; অহিংস, সৎ নিষ্ঠাবান, সুশৃঙ্খল, দর্শন প্রচারকারী, দর্শনশাস্ত্র জ্ঞানী সেই ব্রাহ্মণ।

"ব্রাক্ষ্মণরা নিজ স্বার্থত্যগ করে কাজ করবে, বেদ পড়বে এবং তা অপরকে শেখাবে।"
                     (মনুসংহিতা, ১/৮৮)

ওঁ শান্তি! ওঁ শান্তি! ওঁ শান্তি!

জয় শ্রীরাম
জয় শ্রীকৃষ্ণ
হর হর মহাদেব   

                       শ্রী বাবলু মালাকার
                   (সনাতন ধর্মের প্রচারক)

Post a Comment

0 Comments