চন্দ্রলোকে আলোর ও সূর্যগ্রহণ নিয়ে বেদ কি বলছে?
"চন্দ্রের রূপ রং গোধূসী কালো" চন্দ্র পৃথিবীর একমাত্র প্রাকৃতিক উপগ্রহ এবং সৌর জগতের পঞ্চম বৃহত্তম উপগ্রহ যার কোন আলো নেই।
চন্দ্রের কালো ছায়া আসলে কী?
চন্দ্রের বুকে যে কালো ছায়া দেখা যায়, বহু আগে সেগুলোকে ভাবা হতো সমুদ্র। কিন্তু এখন আমরা জানি, সেগুলো হলো গোধূসী কালো ব্যাসাল্টের সমতলভূমি। আজ থেকে প্রায় ৩০০ থেকে ৩৫০ কোটি বছর আগে অগ্নুৎপাতের ফলে এই ব্যাসাল্ট স্তরের উৎপত্তি হয়। ব্যাসাল্টের মধ্যে যে লোহার যৌগ আছে, সেটা সূর্যের আলো কম প্রতিফলিত করতে পারে বলেই তাকে তুলনামূলকভাবে অনুজ্জ্বল দেখায় পার্শ্ববর্তী উঁচু অঞ্চলের আগ্নেয় শিলা আনর্থসাইটের তুলনায়। চন্দ্রের যেদিক পৃথিবীর দিকে মুখ করা, সেদিকেই এই কালো ব্যাসাল্টের ভূমি বেশি দেখা যায়।
পৃথিবীর সাথে চন্দ্রের গভীর সম্পর্ক রয়েছে। জ্যোতির্বৈজ্ঞানিক দূরত্বের দিক থেকে চিন্তা করলে এরা একে-অপরের বেশ নিকটে অবস্থিত, আর তাই মহাকর্ষীয় আকর্ষণজনিত প্রভাবও বেশি। এই প্রভাবের প্রধানতম অবদান হচ্ছে জোয়ার-ভাটা।
"জোয়ার-ভাটা"
পৃথিবী-চন্দ্র সমাহারের অবিরত পরিবর্তন হচ্ছে। জোয়ার-ভাটার সাথে এর সম্পর্ক রয়েছে। চাঁদের আকর্ষণে চাঁদের দিকে অবস্থিত সমুদ্রের জল তার নিচের মাটি অপেক্ষা বেশি জোরে আকৃষ্ট হয়। এ কারণে চাঁদের দিকে অবস্থিত জল বেশি ফুলে উঠে। আবার পৃথিবীর যে অংশে অবস্থিত জল চাঁদের বিপরীত দিকে থাকে, সেদিকের সমুদ্রের নিচের মাটি তার উপরের জল অপেক্ষা চাঁদ কর্তৃক অধিক জোরে আকৃষ্ট হয়। কারণ এই মাটি জল অপেক্ষা চাঁদের বেশি নিকটবর্তী। ফলে সেখানকার জল মাটি থেকে দূরে সরে যায় অর্থাৎ ছাপিয়ে উঠে। এক্ষেত্রে ফুলে উঠার কাহিনীটিই ঘটে। পৃথিবী যে সময়ের মধ্যে নিজ অক্ষের চারদিকে একবার আবর্তন করে (এক দিনে) সে সময়ের মধ্যে পৃথিবীর যে-কোন অংশ একবার চাঁদের দিকে থাকে এবং একবার চাঁদের বিপরীত দিকে থাকে। এ কারণে পৃথিবীর যে-কোন স্থানে দুইবার জোয়ার এবং দুইবার ভাটা হয়।
তবে জোয়ার-ভাটার জন্য সূর্যের আকর্ষণও অনেকাংশে দায়ী। তবে অনেক দূরে থাকায় সূর্যের আকর্ষণ চাঁদের আকর্ষণের থেকে কম কার্যকর। সূর্য এবং চাঁদ যখন সমসূত্রে পৃথিবীর একই দিকে বা বিপরীত দিকে অবস্থান করে তখন উভয়ের আকর্ষণে সর্বাপেক্ষা উঁচু জোয়ার হয়, জোয়ারের জল বেশি ছাপিয়ে পড়ে। এই অবস্থাকে ভরা কাটাল বা উঁচু জোয়ার বলা হয়। আর পৃথিবীকে কেন্দ্র করে সূর্য এবং চাঁদের মধ্য কৌণিক দূরত্ব যখন এক সমকোণ পরিমাণ হয় তখন একের আকর্ষণ অন্যের আকর্ষণ দ্বারা প্রশমিত হয়। তাই সবচেয়ে নিচু জোয়ার হয় যাকে মরা কাটাল বলে আখ্যায়িত করা হয়। জোয়ার বলতে আমরা শুধুমাত্র সমুদ্রের জলের স্ফীতিকেই বুঝি। কিন্তু প্রকৃতপক্ষে চাঁদ-সূর্যের আকর্ষণে পৃথিবীর স্থলভাগেও অনুরূপ প্রভাবের সৃষ্টি হয়। তাই বলা যায়, জোয়ার -ভাটার ক্ষেত্রে চাঁদ ও সূর্য এবং এদের মধ্যকার আকর্ষণ বল ও অবস্থান মুখ্য ভুমিকা পালন করে।
"চন্দ্রপৃষ্ঠ"
চাঁদের ভূ-তত্ত্ব— চাঁদের সৃষ্টির পরপর, এর পৃষ্ঠ অনেক গরম ছিল এবং কোনো প্রকার গর্ত ছিল না। চাঁদে বিপুল পরিমাণে ধূমকেতু ও গ্রহানুর আঘাতে গর্তের সৃষ্টি হয়। এই সময়টি late heavy bombardment নামে পরিচিত।
চন্দ্র (সংস্কৃত: चन्द्र , অর্থ "জ্বলজ্বলে" বা "চাঁদ") হলেন একজন হিন্দু দেবতা, চাঁদের অধিপতি। তিনি সুদর্শন, সুপুরুষ, দ্বি-বাহুযুক্ত ও তার এক হাতে অস্ত্র ও অন্য হাতে পদ্ম রয়েছে। তিনি তার দশটি শ্বেত ঘোড়ার রথে চড়ে রাত্রে আকাশে উদিত হন৷ তিনি আরও অনেক নামে পরিচিত।
যেমন:— সোম, ইন্দু (উজ্জ্বল বিন্দু), অত্রিসুত (অত্রির পুত্র), শচীন, তারাধিপতি (নক্ষত্রের প্রভু) ও নিশাকর (রাত নির্মাণকারী)। তার নামানুসারে সপ্তাহের একটি দিন হল সোমবার।
"সূর্য্যোদয়"
উৎ পুরস্তাৎ সূর্য এতি বিশ্বদৃষ্টো অদৃষ্টহা।
দৃষ্টাংশ্চ ঘ্নন্নদৃষ্টাংশ্চ সর্বাংশ্চ প্রমৃণন্ ক্রিমীন ।
শব্দার্থ—(পুরস্তাৎ) পূর্বদিকে (সূর্য্যঃ) সূর্য্য (উৎএতি) উদয় হয় (বিশ্বদৃষ্টঃ) সকলেই তাহাকে দেখে অদৃষ্টহা (অদৃষ্ট রোগ বীজানুকে নষ্ট করে (দৃষ্টান) দৃষ্ট রোগ বীজানুকে (ঘ্নন্) মারিয়া (চ) এবং (অদৃষ্টান্) অদৃষ্টরোগ বীজানুকে (সর্বান্) সব (ক্রিমীন) কীটকে (প্রমূনন্) নষ্ট করিয়া।
অনুবাদ— সকলেই দেখে সূর্য্য শুধু উদিতই হয়। কিন্তু সূর্যের উদয়ে রোগ সমূহের দৃষ্ট ও অদৃষ্ট বীজাণু বিনষ্ট হইয়া যায়।
"সূৰ্য্য"
অয়মগ্নি ইহ সূৰ্য্য উদেতু তে।
উদেহি মৃত্যোর্গম্ভীরাৎ কৃষ্ণাচ্চিৎ তমসম্পরি ৷
(অথর্ববেদ, ৫/৩০/১১)
শব্দার্থ— (অয়ম্) এই (অগ্নিঃ) অগ্নি (উপসদ্য) সেবা যোগ্য (ইহ) এখানে (তে) তোমার উপর (সূর্য্যঃ) সূর্য্য (উদেতু) জ্যোতি বিস্তার করুক (গম্ভীরাৎ) গভীর (কৃষ্ণাৎ চিৎ) অত্যন্ত কৃষ্ণ (তমসঃ) অন্ধকার (মৃত্যোঃ) মৃত্যু হইতে (পরি ছুটিয়া (উৎ এহি) উপরে উঠিয়া এস।
অনুবাদ—এই অগ্নি সেবা যোগ্য। এখানে তোমার উপর সূর্য্য জ্যোতি প্রদান করুক। গভীর কৃষ্ণান্ধকার রূপী মৃত্যু হইতে ছুটিয়া তুমি উদিত জ্যোতির দিকে অগ্রসর হও।
"রাত্রি"
সময়ের একটি অংশ যা দিগন্তের সূর্য সূর্যাস্ত ডুবে যাবার পর থেকে শুরু হয়। রাত বা রাত্রি সময়ের একটি অংশ যা দিগন্তের সমান্তরাল থেকে সূর্য ডুবে যাবার পর থেকে শুরু হয়। গোধূলী লগ্ন বা ঈষৎ অন্ধকার হবার মাধ্যমে রাত তার আবির্ভাবের কথা বিশ্ববাসীকে জানান দেয়। রাতের বিপরীত হচ্ছে দিন। রাত শুরু এবং রাত শেষ হবার ক্ষেত্রে কিছু কিছু উপাদান নির্ভরশীল। তন্মধ্যে - ঋতু, অক্ষাংশ, দ্রাঘিমাংশ, সময়রেখা অন্যতম।
নির্দিষ্ট সময়ে আমাদের প্রিয় গ্রহ পৃথিবীর একটি অংশ যখন সূর্যের আলোয় আলোকিত হয় তখন তা দিনরূপে গণ্য হয়। পৃথিবীর অন্য অংশে তখন সূর্যের ছায়া হিসেবে আলো আটকে যায় বা বাধাগ্রস্ত হয়। এ আবরণকেই আমরা সহজভাষায় রাতের অন্ধকার বা রাত বলে থাকি।
চন্দ্রের প্রাণ হচ্ছে সূর্য যার আলোয় চন্দ্র আলোকিত হয়,
পবিত্র বেদ মন্ত্রে বলা হয়েছে—
"দিন ও রাত্রি"
যথাহশ্চ রাত্রিচ ন বিভীতো ন রিষ্যতঃ ।
এবা মে প্রাণ মা বিভেঃ।
(অথর্ববেদ, ২/১৫/২)
শব্দার্থ—(যথা) যেমন (অহঃ) দিন (চ) এবং (রাত্রি) রাত্রি (ন বিভীতঃ) ভয় না (নরিষ্যতঃ) হিংসা করে না (এব-মে প্রাণ) তেমন হে আমার প্রাণ। (মা বিভেঃ) তুমিও ভয় করিও না।
অনুবাদ—হে প্রাণ! দিন ও রাত্রি যেমন ভয় করে না ও হিংসা করে না। তেমন তুমিও ভয় করিও না।
যথা সূৰ্য্যশ্চ চন্দ্রশ্চ ন বিভীতো ন রিষ্যতঃ ।
এবা মে প্রাণ মা বিভেঃ৷৷
(অথর্ববেদ, ২/১৫/৩)।
শব্দার্থ—(যথা) যেমন (সূর্য্যঃ চ চন্দ্রঃ চ) সূর্য্য ও চন্দ্র (ন বিভীতঃ) ভয় করে না (নরিষ্যতঃ) হিংসা করে না (এব মে প্রাণ) হে আমার প্রাণ! (মা বিভেঃ) তুমিও ভয় করিও না।
অনুবাদ—হে প্রাণ! সূর্য্য ও চন্দ্র যেমন ভয় করে না ও হিংসা করে না তেমন তুমিও ভয় করিও না।
আমি চন্দ্র সূর্য্যের আলোয় #আলোকিত—
সূর্য-এর স্বয়ং আলোহীন চাঁদ আলোকিত হয়।
(ঋগ্বেদ, ৫/৪০/৫)।
ওম চন্দ্রমসে নমঃ
প্রণাম মন্ত্রঃ—
দিব্যশঙ্খতুষারাভং ক্ষীরোদার্ণব সম্ভবম্।
নমামি শশিনং ভক্ত্যা শম্ভোর্মুকুট ভূষণম্॥
প্রাচীনকালে মানুষ মনে করত চাঁদ একটি আলাদা গ্রহ যা নিজে আলো বিকিরণ করে। আরবের লোকেরা ভাবত চাঁদ নাকি নূরের তৈরী এক পিন্ড যা পবিত্র তারা কখনো চিন্তাই করতে পারত না যে চাঁদের নিজস্ব আলো নেই।
আধুনিক বিজ্ঞানের আলোয় আজ এটা সুপ্রতিষ্ঠিত যে চাঁদের নিজস্ব কোন আলো নেই, এটি সূর্যের আলোর দ্বারা, সূর্যের আলোকে প্রতিফলিত করে নিজে আলোকিত হয়।
প্রখ্যাত মুসলিম ঐতিহাসিক আলবিরুনী তাঁর ভারতবর্ষের ইতিহাস নিয়ে লিখিত তাখত-ই- হিন্দ গ্রন্থে হিন্দুদের সম্বন্ধে লিখেন,
"তারা বিশ্বাস করে যে সূর্যের রশ্মি চাঁদের সাথে মিলিত হয় এবং চাঁদের মত ঠান্ডা হয়ে প্রতিফলিত হয় এবং ঠান্ডা সেই আলো দিয়ে রাতকে আলোকিত করে।"
আর প্রাচীনকালে হিন্দুদের এই অসাধারন বিজ্ঞানমনস্ক চিন্তাভাবনার উত্স ছিল পবিত্র বেদ।
"সুষুম্ণঃ সূর্যরশ্মিশ্চন্দ্রমা গান্ধর্বস্তস্য"
(যজুর্বেদ, ১৮/৪০)।
অনুবাদ- ঈশ্বর সূর্যরশ্মিকে চন্দ্রের সাথে মিলিত করে একে আলোকিত করেন।
চন্দ্রালোক এবং #সূর্যগ্রহণের সম্বন্ধে একটি অসাধারন মন্ত্র পবিত্র #ঋগ্বেদে পাওয়া যায়—
যত্বা সূর্য স্বর্ভানুস্তমসাবিধ্যদাসুরঃ।
অক্ষেত্রবিদ্যথামুগ্ধো ভুবনান্যদীধয়ুঃ।।
(ঋগ্বেদ, ৫/৪০/৫)।
অনুবাদ— যে চাঁদ সূর্যের আলোয় নিজে আলোকধারন করে সে নিজে যখন সূর্য ও পৃথিবীর মাঝে এক রেখায় এসে ছায়া তৈরী করে তখন অন্ধকারে ভূবন যেমন বিমোহিত হয়ে পড়ে (সূর্যগ্রহণ) ঠিক তেমনি যখন সূর্য ও পৃথিবীর মাঝে এক রেখায় এসে ছায়া তৈরী করে তখন অন্ধকারে ভূবন যেমন বিমোহিত হয়ে পড়ে (সূর্যগ্রহণ) ঠিক তেমনি যখন অজ্ঞানতার অন্ধকার জ্ঞানরুপ আলোকে ঢেকে ফেলে তখন আত্মা তার পথনির্দেশনা হারিয়ে ফেলে।
চাঁদের নিজের আলো নেই, এটি সূর্যের আলো দ্বারা আলোকিত হয়। কিন্তু যখন এই চাঁদ পরিভ্রমণরত অবস্থায় পৃথিবীর সাপেক্ষে সেই সূর্যের সাথে একই রেখায় অবস্থান করে, তখন পৃথিবী হতে দেখা যায় চাঁদ তার অন্ধকার পৃষ্ঠ দ্বারা পুরো সূর্যকেই আবৃত করে ফেলছে। সেই সময়ে পৃথিবী অন্ধকারাচ্ছন্ন হয়ে যায়। ফলে তখন পৃথিবী থেকে অসময়ে অন্যান্য নক্ষত্র, যাদের আমরা তারা বলি, সেগুলোও দৃশ্যমান হয়ে যায় । যারা জ্যোতির্বিদ্যা জ্ঞানশূন্য তারা এরূপ সূর্যগ্রহণের মূল কারণ জানতে পেরে আশ্চর্য হয়ে যায়। অথচ সূর্যগ্রহণ হয় মূলত সেই সূর্যের আলোয় আলোকিত চাঁদেরই কারণে, যা এই মন্ত্রে স্পষ্ট করে বলা হয়েছে।
দেখা যাক চাঁদের আলো নিয়ে বেদে কি বলা হয়েছে—
চাঁদ নিয়ে প্রাচীন আর্য ঋষিরা এক আখ্যা দিয়েছেন সোম বা শুদ্ধের উপমায়। আজ বিজ্ঞানের কারনে আমরা নিশ্চিত যে চাঁদের নিজস্ব কোন আলো নেই সূর্যের আলোয় সে আলোকিত হয়। কিন্তু সেইকালে জ্যোৎস্নাখচিত পূর্ণিমার রাতে চাঁদের অপরুপ এই স্নিগ্ধচ্ছটার রহস্য জানতে মানুষ আকুল হত। দেখে নিই পবিত্র বেদ চাঁদের আলো নিয়ে কি বলা হয়েছে—
সোমো বধুযুরভবোদশ্চিনাস্তামুভা চরা।
সূর্যা যৎপত্যে সংশন্তো মনসা সবিতাদদাত।।
(ঋগ্বেদ, ১০/৮৫/৯)।
অনুবাদ— এই মন্ত্রে বধুরুপী চন্দ্র এবং বররুপী সূর্যের উপমা দেয়া হচ্ছে যেখানে সবিতা চন্দ্রকে আলো উপহার দিচ্ছেন। অর্থাৎ চাঁদের আলো যে সূর্য থেকে প্রাপ্ত তার সুন্দর একটি উপমা সহকারে বর্ণনা পবিত্র বেদে দেয়া হয়েছে।
ওঁ অত্রাহ গোরমন্বত নাম ত্বষ্টুরপীচ্যম্ ।
ইত্থা চন্দ্রমসো গৃহে।
(ঋগ্বেদ, ১/৮৪/১৫)।
অনুবাদ— গমনশীল চন্দ্রলোক সূর্য্যের উজ্জ্বল জ্যােতি প্রতিফলিত হয়—এরূপ মানা হয়।
জ্ঞানী ব্যাক্তিমাত্রেই জানেন সূর্যালোক আবদ্ধ থাকে চন্দ্ররুপ দূর্গের ভেতর।
একই কথা ঋষি যাস্ক বলেছেন—
আদিত্যোহপি গৌরুচ্যতে। উতাদঃপরুষে গবি । পৰ্বতি ভাস্বতীস্যৌপমন্যবঃ। অথাপ্যস্যৈকো রশ্মিশ্চন্দ্রমসং প্রতি দীপ্যতে তদেতেনোপেক্ষিতব্যমাদত্যিহস্য দীপ্তির্ভবতীতি। সুষুম্নঃ সূর্যরশ্মিশ্চন্দ্রমা গন্ধর্ব ইত্যপি নিগমো ভবতি। সোহপি গৌরুচ্যতে অত্রাহ গোরমন্বতেতি তদুপরিষ্টাট ব্যাখ্যাসামঃ। সর্বেইপি রশ্ময়ো গাব উচ্যনাতে।।
(নিরুক্ত, ২/৬)।
আদিত্য কে গৌ বলা হয়। সূর্যের সেই পর্বযুক্ত পুরুষ কে নমস্কার। ঔপমনব্যের মতে, পর্ব থাকা অর্থ নিজ জ্যোতি তে ভাস্বর হওয়া। অধিকন্তু, সূর্যের রশ্মি চন্দ্র কে আলোকিত করে। তা নিম্নোক্ত উক্তি দ্বারা সিদ্ধ হয়।' সূর্যরশ্মি সুষুম্মারূপী আর চন্দ্র ধারকরূপী'।
অর্থাৎ সূর্যকিরণ চন্দ্রে প্রতিফলিত হবার কারনে চন্দ্র আলোকিত হয়।
কাব্যসাহিত্যের জগতে কত গল্প, কবিতা রচিত হয়েছে—
কবি সুকান্ত চাঁদ একে তুলনা করেছিলেন ক্ষুধার্তের রুটির সাথে।
জ্ঞান, বিজ্ঞান, মানবতার কান্ডারী পবিত্র বেদকে অনুসরন না করে হিন্দু জাতিও কি আজ তাদের পথনির্দেশনা হারিয়ে ফেলেছে বাস্তবতা কিন্তু তাই নির্দেশ করছে।
বৈদিক পবিত্র বেদের জ্ঞান ও বৈদিক বিজ্ঞানের এই আশ্চর্য রহস্য ছড়িয়ে দিন সকলের মাঝে পবিত্র বেদের মহিমা ছড়িয়ে দিন সর্বত্র।
ওঁ শান্তিঃ ওঁ শান্তিঃ ওঁ শান্তিঃ
শ্রী বাবলু মালাকার
সনাতন ধর্মের সংস্কৃতি ও বেদ
বেদান্তদর্শন প্রচারক, বাংলাদেশ।
0 Comments
ওঁ তৎ সৎ
নমস্কার